কোনো কোনো দিন বড় স্মৃতিমেদুর করে তোলে। আজ সরস্বতী পুজো। ভালোবাসার বসন্ত পঞ্চমী। আজকের দিনটি আমায় অতীতচারী করে তোলে। মফস্বল শহরের সরস্বতী পুজোর দিন মানেই কত রোমাঞ্চকর অনুভূতি... বাড়ির বাইরে থাকার অগাধ স্বাধীনতা। পাড়ার পুজো, স্কুলের পুজো, অন্য স্কুলে ঠাকুর দেখতে যাওয়া, কুল খাওয়ার মজা -- একটার পর একটা। আড়ম্বরহীন পুজোয় অনাবিল আনন্দের অনুভূতি, অকারণ হাসির দিনগুলি আজ চেষ্টা করেও ফিরে পাই না। একটু বড় বয়সে মেয়েদের হলুদ শাড়ি, সাজগোজ, ক্ষেত্রবিশেষে বাঁকা চাহনি, মুখ টিপে হাসি, বন্ধুদের প্রপোস, কারোর কারোর নিরালায় উষ্ণতা বিনিময় ও আমাদের পাহাড়া দেওয়া (কখনো কখনো আড়ি পাতাও বটে! ) -- এসবই এক মনখারাপ করা অদ্ভূত ভালোলাগার সৃষ্টি করে। অকৃত্রিম সারল্যের সেই গলাগলির দিন গুলোই বোধহয় জীবনের সবচেয়ে বড় পাওনা। সঞ্চয়ও বটে। বছর দুয়েক আগে নিছকই খেয়াল থেকে নিচের কবিতা টি লিখেছিলাম। আজ আরো একবার ভাগ করে নিই।
খেয়াল
ঘুরে আসি সব পুরোনো অলি গলি
অবক্ষয়ের পঁচিশ বছর পর
কেমন আছে ফেলে আসা দিন গুলি।
রোজ বিকেলে আড্ডা দেওয়ার নেশা
ছুটে যেতাম তোদের বাড়ির ছাদে
কখনো সেই কোণের ঘর টা তে
সময় যেতো নিজের মনে বয়ে।
ঘড়ি দেখার ছিল না কোনো বালাই
রেশারেশির ছিল না কোনো লড়াই
লাভ ক্ষতি তে ছিল না যে বিশ্বাস
শুধু তুই আর আমি, আর ওই ছাদ।
না ছিল ফোন, না কিছু ভেবে
দিতিস উঁকি আমার ঘরে
বলতিস তুই এক গাল হেসে
চল ঘুরে আসি গঙ্গার ধারে।
দুটো সাইকেল পাশাপাশি চলে
উৎসাহী লোক চোখাচোখি করে
আমরা দুজন নির্বিকার
চষে ফেলি সব রাস্তা ঘাট।
ছিল না কোনো হিসেবনিকেশ
ছিল না কোনো বিধিনিষেধ
চেনা গন্ডির মধ্যে থাকা, ছিল স্বতঃসিদ্ধ
কাঁচা বয়সের দুটি কচি মন, শুধু অপাপবিদ্ধ।
০৫/০২/২০২২
No comments:
Post a Comment