চিওপ্রিয় ঘোষ তখনও শঙ্খ ঘোষ হয়ে ওঠেন নি। সেটা ১৯৫২ সাল। খাদ্যের দাবি তে আন্দোলন নিয়ে রাস্তায় সাধারণ মানুষের মিছিলে পুলিশের গুলি ও এক বিয়ে - ঠিক - হয়ে - যাওয়া তরুণীর মৃত্যু (সম্ভবত চার জন মারা গিয়েছিলেন) ও তার স্বপ্নভঙ্গের বেদনা তরুণ চিত্তপ্রিয়কে রোমান্টিক অবসেসন্ থেকে বাস্তবের রুক্ষতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল। তাঁর উদ্ধত কলম থেকে বেরিয়ে এসেছিল বাংলা কবিতার এক অনবদ্য কালজয়ী সৃষ্টি -
My blog dates back to 2008. My discomfort with keyboard typing and laziness too prevented me from updating this blog regularly. I penned my feelings, my thoughts, my memories mostly on paper whenever I could manage time. I lost a good number of my writings thanks to my disorganised nature. Let the remaining writings, scattered over here and there, find their destination here in my web space. And let me promise that I will go on updating this blog with my future writings, if that happens!
Monday, April 22, 2024
শঙ্খ ঘোষ
"নিভন্ত এই চুল্লীতে মা / একটু আগুন দে / আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি / বাঁচার আনন্দে।
যমুনাবতী সরস্বতী কাল যমুনার বিয়ে / যমুনা তার বাসর রচে বারুদ বুকে দিয়ে / বিষের টোপর নিয়ে।
যমুনাবতী সরস্বতী গেছে এ পথ দিয়ে / দিয়েছে পথ, গিয়ে।"
সমাজবিমুখ আত্মমগ্নতা নাকি "বিশুদ্ধ শিল্প "- এই দ্বৈরথের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে তিনি তৈরী করেছিলেন কবিতার নিজস্ব ঘরানা যেখানে মানবিক স্পর্শটুকুই বারে বারে হৃদয় ছুঁয়ে গেছে পাঠক - পাঠিকাদের। দাক্ষিণ্যের নেশা বা প্রসাদ পাওয়ার লোভ - কোনকিছুই শঙ্খ বাবু কে তাঁর অবস্থান থেকে একচুলও নড়াতে পারেনি। 'বাবরের প্রার্থনা'র পর গঙ্গায় অনেক জল বয়ে গেছে। তবুও কোনো কালেই কোনো শাসকের কাছে তাঁর কলম বন্ধক রাখেন নি। ২০০৮ এর নন্দীগ্রাম ঘটনার পর একই রকম দৃঢ়তায় তিনি অবিচল ছিলেন। আমরা আবার সাক্ষী থেকেছি তাঁর চেতনার, মননের ও কবিতার মানবিক টানের -
" আমি তো আমার শপথ রেখেছি অক্ষরে অক্ষরে/ যারা প্রতিবাদি তাদের জীবন দিয়েছি নরক করে/ গুলির জন্য সমস্ত রাত সমস্ত দিন খোলা/ বজ্রকঠিন রাজ্যে এটাই শান্তিশৃঙ্খলা/ যে মরে মরুক অথবা জীবন, কেটে যাক শোক করে/ আমি আজ জয়ী সবার জীবন দিয়েছি নরক করে"।
পরিবর্তনের ধাক্কায় ভেসে যাওয়া একটা জাতির "সুশীল সমাজ" যখন মঞ্চ ভাগাভাগির কুৎসিত প্রতিযোগিতায় ও পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যস্ত, তখনও তিনি সযত্নে সেই ভিড় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। বরং সাম্প্রতিক পৌরভোট নিয়ে সুবিধেবাদী বাঙালি বিবেক কে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন -
"যথার্থ এই বীরভূমি / উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে/ পেয়েছি শেষ তীরভূমি / দেখ্ খুলে তোর তিন নয়ন/ রাস্তা জুড়ে খড়গ হাতে/ দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।"
কোভিড আতিমারীতে গতবছরই থেমে গেছে বাঙালি সমাজের বিবেকের শঙ্খধ্বনি। দুদিন আগে চলে গেলো শঙ্খ বাবুর জন্মদিন। চিরকাল কাব্যাদর্শে স্তিতধী মিতভাষী শঙ্খ বাবু পরিমিত ও পরিশীলিত শব্দচয়ন ও আবেগঘন উচ্ছাস বর্জন করে কবিতার যে স্বতন্ত্র ধারা তৈরী করেছিলেন, কবিতার শিল্পে উত্তরণে তা কখনো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় নি, বরং তাঁর কবিতার মানবিক অভিঘাত মানুষ কে আরো বেশি নাড়া দিয়েছে। তাঁর জীবন, দর্শন ও সৃষ্টি বারে বারে চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়েছে "তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়"।
সুমন সিনহা
০৭/০২/২০২২
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
এলোমেলো ভাবনা - ১৪
এখানে গত দুদিন ধরে বেশ বৃষ্টি হলো। গতকালতো বেশ ভালো রকম। সাথে বিদ্যুৎ চমকানো, বাজ পড়া। মানে যাকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত বলে। তার ওপরে কার...

-
আমাদেরও একজন বিদ্যাসাগর ছিলেন। ভাবতেই কেমন অবাক লাগে আজ। একজন শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারকই শুধু ছিলেন না উনি, সীমাহীন ব্যাপ্তি ছিল ওঁর। বাংলা ...
-
School educators, parents, academic professionals and my friends in social network, my elder sister Sutapa Sinha (whom I dearly call as didi...
-
হঠাৎ হঠাৎ মনের মধ্যে উৎপটাং কিছু চিন্তাভাবনা এসে ভীড় করে। কিছুদিন ধরে হাফ মানে ওই অর্ধেক শব্দটা আমাকে খুব ভাবাচ্ছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক...
No comments:
Post a Comment