Monday, April 19, 2021

শক্তি চট্টোপাধ্যায়

হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য

'বৃষ্টি পড়ে এখানে বারোমাস

এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে।'

দু' বোতল মহুয়া পান করার পর যাঁর কলম থেকে এই অসামান্য সৃষ্টি বেরিয়ে আসে, তাঁকে নিশ্চিন্তে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় কবি আখ্যায়িত করলে বোধহয় অত্যুক্তি করা হবে না। মধ্যরাতে যে রাগী যুবক কলকাতা শাসন করতেন, নভেম্বর ইশতেহার (১৯৬১) প্রকাশ করে হাংরি আন্দোলনের জনকও তিনি। সাহিত্যিক মতান্তরের জন্য অনায়াসে যিনি আবার ১৯৬৩ সালে হাংরি আন্দোলন ত্যাগ করে কৃত্তিবাস গোষ্ঠীতে যোগ দিতে পারেন। জীবনের প্রতি উদাসীনতা সম্ভবত ওঁনার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ছিল।! ১৯৫৮ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশকের কাছে জমা দেওয়ার পর তা যখন প্রকাশ পায় তখন ১৯৬১! তাঁর আদরের 'নিকষিত হেম' ততদিনে 'হে প্রেম, হে নৈঃশব্দ্য' হয়ে গেছে!! একমাত্র কবিতার কাছেই শুধু দায়বদ্ধতা থাকলে বোধহয় এরকম করা যায়।
উচ্ছৃঙ্খলতা ও বাউন্ডুলেপনা ওঁনার জীবনের সাথে প্রায় সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই কোনদিন শৃঙ্খলে বন্দী থাকেন নি। হয়তো সেটাই ওঁনার রুটিন ছিল! তবুও 'অভিমানী প্রেমিকার মত ' লিখেছেন 'চন্দনের ধূপ আমি কবে পুড়িয়েছি মনে নেই, মন আর স্মৃতিগুলি ধরে না আদরে।' বাউন্ডুলে অনেকদিন আগেই ঘুমিয়েছেন। তবুও প্রশ্নগুলো থেকেই যায় যে কে বেশি পাগল, কবি না কবিতা... কে বেশি মাতাল, কবি না কবিতা... যদিও পদ্য বা মহুয়া, কারোরই দায় নেই সেই হিসেব দেওয়ার। কবি না কবিতা, কে বেশি ক্লান্ত সেই তর্কে না গিয়ে এই প্যান্ডেমিক ক্লান্তিতেও কানে বাজে তাঁরই কবিতার লাইন... 'দুয়ার এঁটে ঘুমিয়ে আছে পাড়া'
২৫/১১/২০২০
শুধু 'রাতের কড়া নাড়ার' বদলে মাঝে মাঝে অ্যাম্বুলেন্সের হৃদয়বিদারক আওয়াজ শুনতে পাই। যুঝবার 'শক্তি' দিও। জন্মদিনে প্রণাম ও শ্রদ্ধা কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়।
সুমন সিনহা
২৫/১১/২০২০


No comments:

এলোমেলো ভাবনা - ১২

আজ  সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিন। সুনীল বাবুর উপন্যাস, কবিতা বা ইতিহাসধর্মী লেখালেখি অল্পস্বল্প যেটুকু পড়েছি, ভেবেছিলাম সেসব নিয়েই "অন...