'দৌড়' দিয়ে শুরু করেছিলেন। তারপর একের পর এক। উত্তর আধুনিক বাঙালি সমাজের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক যাপনের আয়না ওঁনার সৃষ্টি। সাবলীল লেখনীর কোথাও কোনো ভণিতা নেই। কখনো কোনো ছদ্মনাম ব্যবহার করেন নি। সব ধরণের সামাজিক স্তর থেকে উঠে এসেছে ওঁনার গল্প ও উপন্যাসের চরিত্ররা। সমস্ত রচনাই উপলব্ধির, বিশ্বাসের, নির্মাণের। সাহিত্য সৃষ্টি করতে গিয়ে কখনো বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করেন নি। বাস্তববিচ্যুত না হয়েই উনি যেমন স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তেমনই নিখুঁত ও দক্ষ হাতে সময়ের ছবি কে ধরে রেখেছেন। 'গর্ভধারিণী' তে সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান থেকে উঠে আসা সুদীপ, আনন্দ, কল্যাণ ও জয়িতা যেমন সমবেতভাবে এক সংস্কারমুক্ত ও সাম্যবাদী সমাজের স্বপ্ন দেখে, তেমনই নিজের রাজনৈতিক বোধ কে লুকিয়ে না রেখে এক অশান্ত সময়ের জ্বলন্ত দলিল লিখে যান 'কালবেলা' তে। সাহিত্যের ইতিহাসে জন্ম দেন কালজয়ী চরিত্র মাধবীলতা কে। আভিধানিক অর্থে যে অবলম্বন ছাড়া বেড়ে উঠতে পারেন না, বাস্তবের মাটি তে সে ই 'আলোকস্তম্ভের মতো একা'। যার সোচ্চার দাবি শুধু 'খরতপ্ত মধ্যাহ্নে এক গ্লাস শীতল জল' হতে চাওয়া। অসীম সম্ভাবনাময় একটা সামাজিক বিপ্লবের ব্যর্থতায় ও স্বপ্নভঙ্গের গ্লানি ও বেদনায় জর্জরিত, আচ্ছন্ন, শ্রান্ত ও ক্লান্ত অনিমেষরা পঙ্গু ও হতাশ অবস্থায় যখন আবিষ্কার করে 'বিপ্লবের অপর নাম মাধবীলতা', তখন জীবনের সত্যই জয়লাভ করে। ভুল বুঝতে পারার থেকে মূল্যবান আর কি হতে পারে!!
জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও প্রণাম সমরেশ মজুমদার মহাশয়। ভালো থাকবেন। বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক।সুমন সিনহা১০/০৩/২০২১
No comments:
Post a Comment