Sunday, April 18, 2021

ইতিহাসের আলোয় মুর্শিদাবাদ: প্রথম পর্ব


ইতিহাসের আলোয় মুর্শিদাবাদ

পর্ব ১: মুর্শিদাবাদের পত্তন ও নামকরণ

DISCLAIMER: মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরে আমার জন্ম ও বড় হওয়া। মুর্শিদাবাদ নগরীর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে এক রঙিন অথচ করুন ইতিহাস। পলাশীর যুদ্ধের পর থেকেই রাজধানী মুর্শিদাবাদের গুরুত্ব কমতে শুরু করে। মুর্শিদাবাদের শিল্প, বাণিজ্য, সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের ইতিহাস তুলনামূলক ভাবে উপেক্ষিত ও অবহেলিত রয়ে গেছে বলেই মনে হয়। এই ভাবনা থেকেই এ বিষয়টি নিয়ে লিখেছি যদিও ইতিহাস লেখার অ্যাকাডেমিক ছাড়পত্র আমার নেই।

সাধারণ ভাবে একটি শহর বা নগরের কোনো প্রতিষ্ঠাতা থাকে না, স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই শহর বা নগরের উৎপত্তি হয়। এর ব্যতিক্রম হাতে গোনা যায়। মুর্শিদাবাদ এই ব্যাতিক্রমের মধ্যে পড়ে।
শুরু করি সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে। দিল্লীর মসনদে তখন মুঘল সম্রাট ঔরংজেব। গোঁড়া সুন্নী মুসলমান হয়ে দাক্ষিনাত্যের দুই স্বাধীন শিয়া রাজ্য বিজাপুর ও গোলকুন্ডা কে শায়েস্তা করতে ১৬৮০ সাল থেকেই তিনি দাক্ষিনাত্যে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন এবং প্রায় কুড়ি বছর ধরে সেখানে পড়ে রইলেন। রাজধানী দিল্লী থেকে তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগে বিস্তৃত সাম্রাজ্যের বহু অংশেই তখন অরাজকতা, শান্তিশৃঙ্খলা ও শাসনব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। সাম্রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চল থেকেই সম্রাটের কাছে রাজস্ব পাঠানো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দাক্ষিনাত্যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে উঠেছে।

এই দুরবস্থার সময় মুঘল সাম্রাজ্য ও সম্রাটের একমাত্র ভরসা ছিল সুবে বাংলা। সপ্তদশ শতক ও অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে সুবে বাংলা মুঘল সাম্রাজ্যের অন্যতম সমৃদ্ধ সুবা (প্রদেশ) হিসেবে গণ্য হত। সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি থেকেই বাংলা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে। সব মুঘল ফরমান, পরওয়ানা বা সরকারি নথিপত্রে বাংলা কে 'ভারতবর্ষের স্বর্গ' বলে উল্লেখ করা হতো। বাংলার সমৃদ্ধিতে আকৃষ্ট হয়ে এবং এখান থেকে ধনরত্ন আহরণ করার জন্য ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল ও বিভিন্ন দেশ থেকে বহু লোকের সমাগম হতো এই বাংলায়। ধনরত্নের লোভ ছেড়ে তারা সহজে বাংলা থেকে বিদায় নিতে পারতো না। ১৬৬০ এর দশকে ফরাসী পর্যটক বার্নিয়ে (Bernier) মন্তব্য করেছেন "... the rich exuberance of country... has given rise to a proverb... that the kingdom of Bengal has a hundred gates open for entrance, but not a single one for departure." এই সুবে বাংলারই একটি অঞ্চলের নাম ছিল মখসুদাবাদ। আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরিতে একজন মখসুস খানের নাম পাওয়া যায়, যিনি একজন মুঘল অমাত্য হিসেবে ষোড়শ শতকের শেষদিকে বাংলা ও বিহারে রাজকর্মে নিযুক্ত ছিলেন। মখসুস খান ওখানে একটি সরাই নির্মাণ করেন এবং স্থানটি তাঁর নামানুসারে মখসুদাবাদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ডাচ পর্যটক ভ্যালেন্টাইনের (Valentijn, ১৬৫৮-৬৪) ম্যাপে মখসুদাবাদ কে গঙ্গার দুই শাখার মধ্যবর্তী একটি দ্বীপ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ঐতিহাসিক নিখিলনাথ রায়ের মতে সুলতান হোসেন শাহের সময় মুখসূদন দাস নামে এক নানকপন্হী সন্ন্যাসী তাঁকে অসুখ থেকে সুস্থ করে তোলায় তিনি তাঁকে ঐ অঞ্চল টি দান করেন এবং ঐ সন্ন্যাসীর নামানুসারে স্থানটির নাম হয় মখসুদাবাদ। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে মখসুদাবাদ কাঁচা রেশম ও রেশমবস্ত্রের উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলো এবং ক্রমশঃ এই অঞ্চলটির গুরুত্ব বাড়তে থাকে। ফলে এখানে শাসন বিভাগের একটি কেন্দ্র স্থাপিত হয়। স্ট্রেনশ্যাম মাস্টার (Streynsham Master) ও উইলিয়াম হেজেসের (William Hedges) লেখায় এর উল্লেখ আছে। যাইহোক, মখসুদাবাদ প্রসঙ্গে আবার পরে আসা যাবে। আমরা এখন ফিরে যাই সপ্তদশ শতকের শেষের দিকে।

সেটা ১৬৯০ সাল। ঔরংজেবের জীবিত জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রথম বাহাদুর শাহের পুত্র, অর্থাৎ ঔরংজেবের পৌত্র, শাহজাদা মহম্মদ আজিমুদ্দিন সুবাদার হিসেবে বাংলায় আসেন। ইতিহাসে তিনি আজিম-উস-শান নামেই সমধিক পরিচিত। বাংলা থেকে রাজস্ব আদায় ও সম্রাটকে দাক্ষিনাত্যে অর্থযোগান দেওয়ার ব্যাপারে আজিম-উস-শানের কোনো উৎসাহই ছিল না কারণ তাঁর লক্ষ্য ছিল বাংলা থেকে যথেষ্ট ধনসম্পত্তি আহরন করে ঔরংজেবের আসন্ন মৃত্যুর পর দিল্লির মসনদ দখল করার লড়াইয়ে যোগ দেওয়া। আশাহত সম্রাট খোঁজ শুরু করলেন এমন একজন দক্ষ ও বিশ্বাসী ব্যাক্তির যিনি বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করে রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং তাঁকে দাক্ষিনাত্যে নিয়মিত অর্থ পাঠাবেন। ভাগ্যক্রমে তিনি এমন একজনকে পেয়েও গেলেন, যাঁর তখন নাম ছিল মহম্মদ হাদি।

এবার দেখে নেওয়া যাক কে এই মহম্মদ হাদি। ঔরংজেব যখন মহম্মদ হাদিকে বাংলার দেওয়ান পদে নিযুক্ত করেন তখন তিনি হায়দরাবাদের দেওয়ান ও ইয়েলকোন্ডার ফৌজদার। তাই রাজস্ব আদায় বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল ও একাজে যথেষ্ঠ সুনাম অর্জন করেছিলেন বলেই ঔরংজেবের নজরে পড়েন। বাংলার দেওয়ান পদে নিযুক্ত করার পর সম্রাট তাঁকে করতলব খাঁ উপাধি দিয়ে ১৭০০ সালের নভেম্বর মাসে বাংলায় পাঠান। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তিনি মখসুদাবাদের ফৌজদার পদেও নিযুক্ত হন। এই করতলব খাঁ ওরফে মহম্মদ হাদি জন্মসূত্রে ছিলেন ব্রাহ্মণ। স্যার যদুনাথ সরকার মনে করেন তিনি জন্মসূত্রে দক্ষিণ ভারতীয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। ফারসী ইতিহাসেও তিনি ব্রাহ্মণ ছিলেন বলে উল্লেখ আছে। খুব অল্প বয়সেই তাঁকে কিনে নেন হাজি শফি ইস্পাহানি নামে এক অভিজাত পারসিক ব্যাক্তি। হাজি সাহেব তাঁকে নিজের পুত্রের মতন বড় করে তোলেন এবং মহম্মদ হাদি নাম দেন। হাজি শফি বিভিন্ন সময়ে মুঘল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন পদে, মূলতঃ দেওয়ান, নিযুক্ত ছিলেন। সম্ভবত ১৬৯০ সালে মুঘল রাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে হাজি শফি মহম্মদ হাদি কে নিয়ে পারস্য দেশে ফিরে যান। কিন্তু হাজি সাহেবের মৃত্যুর পর মহম্মদ হাদি আবার ভারতবর্ষে ফিরে আসেন এবং দেওয়ান আবদুল্লা খুরাসানির অধীনে কার্যভার গ্রহন করেন। যেহেতু হাজি শফি ও খুরাসানি দুজনেই দেওয়ান ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কাজ করে মহম্মদ হাদি কিছুদিনের মধ্যেই রাজস্ব ব্যাপারে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন এবং হায়দরাবাদের দেওয়ান হিসেবে যথেষ্ঠ কৃতকার্য হন। তাই অতি সহজেই তিনি মুঘল সম্রাট ঔরংজেবের নজরে পড়েন এবং সম্রাট তাঁকে বাংলার দেওয়ান পদে নিযুক্ত করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন নি।

বাংলার দেওয়ান পদে করতলব খাঁ'র নিযুক্তি সুবাদার শাহজাদা আজিম-উস-শান মোটেই মেনে নিতে পারেন নি। এখানে মনে রাখা দরকার মুঘল শাসন ব্যবস্থায় সুবাদার ও দেওয়ান দুজনেই সম্রাটের দ্বারা নিযুক্ত হতেন। দেওয়ান সুবাদারের অধীনে ছিলেন না, সোজা মুঘল সম্রাটের কাছেই ছিল তাঁর দায়বদ্ধতা। ফলতঃ রাজস্ব বিভাগের ওপর আজিম-উস-শানের আর কোনও কর্তৃত্বই থাকলো না এবং দিল্লির বাদশাহী মসনদের জন্য আসন্ন গৃহযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলা থেকে প্রয়োজনীয় টাকা পয়সা ছিনতাই করার পথে করতলব খাঁ প্রধান অন্তরায় হয়ে উঠলেন।

করতলব বাংলায় এসেই সোজা রাজধানী জাহাঙ্গীরনগরে (যা এখন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা) চলে যান এবং দেওয়ানী কাজে মনোনিবেশ করলেন। প্রথমেই তিনি রাজস্ব বিভাগের সব কর্মচারীকে সুবাদারের আওতার বাইরে নিয়ে এলেন অর্থাৎ নিজের অধীনে নিয়ে এলেন। তারপর তিনি রাজস্ব বৃদ্ধি ও তার অপচয় বন্ধের জন্য বিভিন্ন সংস্কার সাধন করেন যার ফলে প্রথম বছরেই তিনি মুঘল সম্রাট ঔরংজেবকে দাক্ষিনাত্যে এক কোটি টাকা পাঠাতে সমর্থ হন।

এতে আজিম-উস-শান আরো ক্ষেপে গেলেন এবং করতলব খাঁ কে খুনের ষড়যন্ত্র করেন। সেই ষড়যন্ত্রের ইতিহাস আর একদিন লেখা যাবে। কিন্তু করতলব খাঁ'র বিচক্ষনতার কাছে আজিম-উস-শান ধরা পড়ে যান। করতলব খাঁ তাঁর খুনের চক্রান্তের বিবরণ স্বয়ং ঔরংজেবকে কে জানান এবং বাংলা ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু করতলব খাঁ'র ওপর ঔরংজেবের ছিল অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস এবং যেহেতু একমাত্র করতলবই তাঁকে নিয়মিত অর্থ যোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন, তাই তিনি তাঁর ওপর যথেষ্ঠ নির্ভরশীল ছিলেন। এছাড়াও করতলব খাঁ'র যোগ্যতা ও সততা ছিল প্রশ্নের অতীত। তাই ঔরংজেব করতলব কেই বাংলার দেওয়ান হিসেবে বহাল রাখেন। এখানে মনে রাখা দরকার করতলব একই সাথে বাংলা, বিহার ও ওড়িষ্যার দেওয়ান ছিলেন, ওড়িষ্যার নাজিম ও মখসুদাবাদের ফৌজদার ছিলেন।
সে যাই হোক, শাহজাদা আজিম-উস-শান সুযোগ পেলেই আবার তাঁর প্রানহানির চেষ্টা করতে পারেন, এই আশঙ্কায় তিনি জাহাঙ্গীরনগর অর্থাৎ ঢাকা থেকে দূরে কোথাও তাঁর দেওয়ানী কার্যালয় সরিয়ে নিতে মনস্থ করলেন। অনেক ভেবেচিন্তে তিনি মখসুদাবাদ কে নির্বাচন করেন। এর একটা কারণ হল করতলব যেহেতু মখসুদাবাদের ফৌজদারও ছিলেন, সেজন্য তিনি ঢাকার চেয়ে ওখানে বেশি নিরাপদ ছিলেন। দ্বিতীয়ত এসময় গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চলগুলিতে ইউরোপীয় কোম্পানি গুলো শক্ত ঘাঁটি তৈরী করতে শুরু করে দিয়েছিলো। বাংলার প্রায় কেন্দ্রস্থানে অবস্থিত বলে ঢাকার চেয়ে মখসুদাবাদের অবস্থান অনেক বেশী উপযোগী ছিল। তাই হয়তো তিনি এটাও ভেবেছিলেন যে ওখান থেকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির ওপর নজরদারি করাও অনেক টা সুবিধেজনক হবে।
মখসুদাবাদে দেওয়ানী স্থানান্তরিত করে করতলব খাঁ রাজস্ব বিভাগের আরো সংস্থার করেন এবং এর ফলে রাজস্বের পরিমাণ প্রচুর বৃদ্ধি পায়। বাংলার রাজস্ব নিয়ে তিনি দাক্ষিনাত্যে সম্রাট ঔরংজেবের কাছে রওনা হন। বাদশাহী দরবারে পৌঁছে তিনি সম্রাট ও তাঁর মন্ত্রী দের প্রচুর পরিমাণ নগদ টাকা ও বাংলা থেকে আনা নানা দুর্লভ সামগ্রী উপহার দিলেন এবং রাজস্বের সব হিসাবপত্র বাদশাহের প্রধান দেওয়ানের কাছে পেশ করেন। বাদশাহের দেওয়ান হিসাবপত্র পরীক্ষা করে অত্যন্ত প্রীত হলেন এবং করতলব খাঁ'র ভূয়সী প্রশংসা করেন। সম্রাট ঔরংজেব করতলব খাঁ'র ওপর অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে বহুমূল্য পোষাক, পতাকা, নাগরা ও তরবারি উপহার দিলেন। সর্বোপরি তিনি তাঁকে মুর্শিদকুলি খান উপাধিতে ভূষিত করলেন এবং তাঁর উপাধি অনুসারে মখসুদাবাদের নাম মুর্শিদাবাদ করার অনুমতি দিলেন। মুর্শিদকুলি মখসুদাবাদে ফিরে এসে নতুন নাম মুর্শিদাবাদ চালু করলেন এবং সেখানে একটি বাদশাহি টাঁকশালও স্থাপন করেন।
স্থানটি নির্বাচন করেই শাহজাদার অনুমতি না নিয়েই, দেওয়ানী কার্যালয়ের সব আমলা কর্মচারীদের নিয়ে করতলব খাঁ মখসুদাবাদে চলে এলেন। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে তিনি ঢাকা থেকে বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ব্যাঙ্কারদের তাঁর সঙ্গে করে নিয়ে আসেন, যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বাংলার জগৎ শেঠ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা মানিকচাঁদও। করতলবকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কিছুদিন পরেই ঔরংজেব আজিম-উস-শান কে বাংলা ছেড়ে বিহার চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর ফলে ঢাকায় সুবাদারের উপস্থিতি আর থাকলো না, মখসুদাবাদই সবার সব কাজকর্মের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠলো।
এখন প্রশ্ন হল ঠিক কবে থেকে মখসুদাবাদ থেকে মুর্শিদাবাদ নাম চালু হলো? স্যার যদুনাথ সরকার বলেছেন ১৭০২ সালের ২৩ শে ডিসেম্বর সম্রাটের কাছ থেকে করতলব খাঁ মুর্শিদকুলি উপাধি পান। সেক্ষেত্রে ১৭০৩ সালে তিনি মুর্শিদাবাদ নামটি চালু করেছিলেন কারণ দাক্ষিনাত্য থেকে মখসুদাবাদ ফিরতে দু'তিন মাস লেগেছিল বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু আধুনিক গবেষক আবদুল করিম মনে করেন যে মুর্শিদাবাদ নগরী পত্তন হয় ১৭০৪ সালে। মুর্শিদাবাদের টাঁকশালে প্রথম যে মুদ্রা তৈরী হয় তাতেও ১৭০৪ সাল লেখা ছিল। তাই সবদিক বিবেচনা করে এটা ধরে নেওয়া হয় যে মুর্শিদাবাদের পত্তন হয়েছিল ১৭০৪ সালেই। সেই হিসেবেই ২০০৪ সালে মুর্শিদাবাদের তিনশ বছর উদযাপন অনুষ্ঠান হয়েছিল।


ঋণস্বীকার: অধ্যাপক সুশীল চৌধুরী মহাশয়ের 'নবাবি আমলে মুর্শিদাবাদ' বইটি এই লেখার অনুপ্রেরণা। সমস্ত তথ্য এই বইটি থেকেই নেওয়া, তাই আলাদা করে কোনো সূত্র (reference) দিইনি। বইটিতে ব্যবহৃত বানানই এখানে লেখা হয়েছে এবং ফটোগুলিও বইটি থেকেই নেওয়া। 

সুমন সিনহা 
১৭/০৭/২০২০




No comments:

এলোমেলো ভাবনা - ১২

আজ  সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিন। সুনীল বাবুর উপন্যাস, কবিতা বা ইতিহাসধর্মী লেখালেখি অল্পস্বল্প যেটুকু পড়েছি, ভেবেছিলাম সেসব নিয়েই "অন...